Use translator to translate this page

কে ছিলেন প্রভু যীশু ?

       কে ছিলেন যীশু ? 

আপনি হয়ত দেওয়ালে ক্রুশবিদ্ধ যীশুর ছবি দেখে থাকবেন কিংবা কারোর মুখে যীশুর কথা শুনে থাকবেন । কিন্তু আপনি কি সত্যি জানেন কে ছিলেন যীশু যাকে সবাই প্রভু বলেন ?  প্রভু যীশুর সম্পর্কে আপনার কি ধারনা ? তিনি কে ছিলেন ? কোন মহাপুরুষ ? একজন অবতার ? স্বয়ং ঈশ্বর ? নাকি শুধুই খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক ?
Read this article In English
হ্যালো , আমার নাম সুকুমার এবং আজ আমি আমার এই লেখার মধ্য দিয়ে যীশুর সম্পর্কে আমার ধারনা বলতে যাচ্ছি যা গত কয়েক বছরে সম্পূর্ণ বদলে গেছে । একসময় আমারও ধারনা ছিল যীশু কোন সাধারন একজন মানুষ এবং শুধুই খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক ছাড়া কিছুই না । কিন্তু গত কয়েক বছরে আমার এই ধারনা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে । 

তিনি কে ? 

প্রায় সব ধরনের লোকই যীশুর সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই প্রশ্নই করেছে । তার সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভের প্রাথমিক পর্যায়ে যীশুর নিজের শিষ্যেরা ও আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করেছেন , " ইনি তবে কে যে,  বায়ু এবং সমুদ্রও ইহার আজ্ঞা মানে ?" ( মার্ক ৪ঃ৪১)    
তার সময়ের ধর্মীয় নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন " এ কে যে ঈশ্বর নিন্দা করিতেছে ? একমাত্র ঈশ্বর ব্যাতিরেকে আর কে পাপ ক্ষমা করিতে পারে? " ( লুক ৫ঃ২১) 
এবং তার সাড়ে তিন বছরে প্রচারের শেষে আমরা পড়ি " যীশু জেরুশালেমে ঢুকলে পর সমস্ত শহরে হুলুস্থুল পরে গেল , সবাই জিজ্ঞেস করতে লাগল 'ইনি কে' ? " ( মথি ২১ঃ১০)  
এর সঠিক উত্তর জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন আনে । বাইবেল লেখা হয়েছিল যেন মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর স্বয়ং দিতে পারে । আসুন আমরা বাইবেল থেকে কয়েকটি ঘটনা দেখি  এবং এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি ঃ 
                              মথি ১৬ঃ১৩-১৭ 
"পরে যীশু কৈসরিয়া ফিলিপির অঞ্চলে গিয়া আপন শিষ্যদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, মনুষ্যপুত্র কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে ? তাহারা কহিলেন, কেহ কেহ বলে, আপনি যোহন বাপ্তাইজক; কেহ কেহ বলে আপনি এলিয়; আর কেহ কেহ বলে, আপনি যীরমিয় কিম্বা ভাববাদীগণের কোন একজন । তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে ? শিমোন পিতর উত্তর করিয়া কহিলেন, আপনি সেই খ্রিস্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র । যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, হে যোনার পুত্র শিমোন, ধন্য তুমি। কেননা রক্ত মাংস তোমার নিকটে ইহা প্রকাশ করে নাই , কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতা ইহা প্রকাশ করিয়াছেন । " 
                             যোহন ৪:৬-১৪ 
তখন যীশু পথশ্রান্ত হওয়াতে অমনি সেই কূপের পার্শ্বে বসিলেন। বেলা তখন অনুমান ষষ্ঠ ঘটিকা। শমরিয়ার একজন স্ত্রীলোক জল তুলিতে আসিল। যীশু তাহাকে বলিলেন, আমাকে পান করিবার জল দেও। কেননা তাঁহার শিষ্যেরা খাদ্য ক্রয় করিতে নগরে গিয়াছিলেন। তাহাতে শমরীয় স্ত্রীলোকটি বলিল, আপনি যিহূদী হইয়া কেমন করিয়া আমার কাছে পান করিবার জল চাহিতেছেন? আমি ত শমরীয় স্ত্রীলোক। কেননা শমরীয়দের সহিত যিহূদীদের ব্যবহার নাই।- যীশু উত্তর করিয়া তাহাকে কহিলেন, তুমি যদি জানিতে, ঈশ্বরের দান কি, আর কে তোমাকে বলিতেছে, ‘আমাকে পান করিবার জল দেও’, তবে তাঁহারই নিকটে তুমি যাচ্ঞা করিতে এবং তিনি তোমাকে জীবন্ত জল দিতেন। স্ত্রীলোকটি তাঁহাকে বলিল, মহাশয়, জল তুলিবার জন্য আপনার কাছে কিছুই নাই, কূপটিও গভীর; তবে সেই জীবন্ত জল কোথা হইতে পাইলেন? আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোব হইতে কি আপনি মহান? তিনিই আমাদিগকে এই কূপ দিয়াছেন, আর ইহার জল তিনি নিজে ও তাঁহার পুত্রগণ পান করিতেন, তাঁহার পশুপালও পান করিত। যীশু উত্তর করিয়া তাহাকে কহিলেন, যে কেহ এই জল পান করে, তাহার আবার পিপাসা হইবে; কিন্তু আমি যে জল দিব, তাহা যে কেহ পান করে, তাহার পিপাসা আর কখনও হইবে না; বরং আমি তাহাকে যে জল দিব, তাহা তাহার অন্তরে এমন জলের উনুই হইবে, যাহা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলিয়া উঠিবে।
                          যোহন ৪:২৪-২৬  
ঈশ্বর আত্মা; আর যাহারা তাঁহার ভজনা করে, তাহাদিগকে আত্মায় ও সত্যে ভজনা করিতে হইবে। 25স্ত্রীলোকটি তাঁহাকে বলিল, আমি জানি, মশীহ আসিতেছেন, যাঁহাকে খ্রীষ্ট বলে, তিনি যখন আসিবেন, তখন আমাদিগকে সকলই জ্ঞাত করিবেন। যীশু তাহাকে বলিলেন, তোমার সহিত কথা কহিতেছি যে আমি, আমিই তিনি।
                         মার্ক ১৪:৬১-৬৪ 
কিন্তু তিনি নীরব রহিলেন, কোন উত্তর দিলেন না। আবার মহাযাজক তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি সেই খ্রীষ্ট, পরমধন্যের পুত্র? যীশু কহিলেন, আমি সেই; আর তোমরা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রমের দক্ষিণ পার্শ্বে বসিয়া থাকিতে ও আকাশের মেঘসহ আসিতে দেখিবে।


যদিও যীশু একজন মানুষ হয়ে জন্মেছিলেন তথাপি তার কুমারি গর্ভে জন্ম নেওয়া, মৃতকে জীবন দেওয়া, অন্ধের চোখ খুলে দেওয়া, কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করা, পক্ষাঘাতকে সুস্থ করা প্রভৃতি ঘটনা প্রমান দেয় যে তিনি ঈশ্বরের স্বরূপ বিশিষ্ট ছিলেন । যখন যীশু ইহুদি নেতাদেরকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি আব্রাহামকে দেখেছেন , তখন কি হয়েছিল পড়ুন , 
       "তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার দিন দেখিবার আশায় উল্লসিত হইয়াছিলেন, এবং তিনি তাহা দেখিলেন ও আনন্দ করিলেন। তখন যিহূদীরা তাঁহাকে কহিল, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বৎসর হয় নাই, তুমি কি অব্রাহামকে দেখিয়াছ? যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্বাবধি আমি আছি। (যোহন ৮ঃ৫৬-৫৮ ) 
                        যোহন ১০ঃ২২-২৮ 
সেই সময়ে যিরূশালেমে মন্দির-প্রতিষ্ঠার পর্ব উপস্থিত হইল; তখন শীতকাল; আর যীশু ধর্মধামে শলোমনের বারান্দায় বেড়াইতেছিলেন। তাহাতে যিহূদীরা তাঁহাকে ঘেরিয়া বলিতে লাগিল, আর কত কাল আমাদের প্রাণ দোলায়মান রাখিতেছ? তুমি যদি খ্রীষ্ট হও, স্পষ্ট করিয়া আমাদিগকে বল। যীশু উত্তর করিলেন, আমি তোমাদিগকে বলিয়াছি, আর তোমরা বিশ্বাস কর না; আমি যে সকল কার্য আমার পিতার নামে করিতেছি, সেই সমস্ত আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেছে। কিন্তু তোমরা বিশ্বাস কর না, কারণ তোমরা আমার মেষদের মধ্যে নহ। আমার মেষেরা আমার রব শুনে, আর আমি তাহাদিগকে জানি, এবং তাহারা আমার পশ্চাদ্‌গমন করে; আর আমি তাহাদিগকে অনন্ত জীবন দিই, তাহারা কখনই বিনষ্ট হইবে না, এবং কেহই আমার হস্ত হইতে তাহাদিগকে কাড়িয়া লইবে না।
                      যোহন ৩ঃ১০-১৮
যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, তুমি ইস্রায়েলের গুরু, আর এই সকল বুঝিতেছ না?
সত্য সত্য, আমি তোমাকে বলিতেছি, আমরা যাহা জানি তাহা বলি, এবং যাহা দেখিয়াছি তাহার সাক্ষ্য দিই; আর তোমরা আমাদের সাক্ষ্য গ্রহণ কর না। আমি পার্থিব বিষয়ের কথা কহিলে তোমরা যদি বিশ্বাস না কর, তবে স্বর্গীয় বিষয়ের কথা কহিলে কেমন করিয়া বিশ্বাস করিবে? আর স্বর্গে কেহ উঠে নাই; কেবল যিনি স্বর্গ হইতে নামিয়াছেন, সেই মনুষ্যপুত্র, যিনি স্বর্গে থাকেন। আর মোশি যেমন প্রান্তরে সেই সর্পকে উচ্চে উঠাইয়াছিলেন, সেইরূপে মনুষ্যপুত্রকেও উচ্চীকৃত হইতে হইবে, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন পায়।
কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। কেননা ঈশ্বর জগতের বিচার করিতে পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেন নাই, কিন্তু জগৎ যেন তাঁহার দ্বারা পরিত্রাণ পায়। যে তাঁহাতে বিশ্বাস করে, তাহার বিচার করা যায় না; যে বিশ্বাস না করে, তাঁহার বিচার হইয়া গিয়াছে, যেহেতু সে ঈশ্বরের এক জাত পুত্রের নামে বিশ্বাস করে নাই।
উপরের ঘটনা গুলি যীশুর ঈশ্বরত্বকে প্রমান করে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই । 
সি এস লুইস, যিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খ্যাতনামা অধ্যাপক ছিলেন, তিনি একবার বলেছিলেন, কোন মানুষ, সাধারন মানুষ হয়ে যীশু যে ধরনের কথা বলেছেন, তা বললেও কিছুতেই কোনও মহান শিক্ষক হতে পারবেন না । হয় তিনি একজন পাগল অথবা নরকের শয়তান । আপনাকেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে । হয় " এই মানুষটি " ঈশ্বর পুত্র ; অথবা কোন পাগল বা তার চেয়ে ও খারাপ কিছু। তাঁকে আপনি বোকা বলে এড়িয়ে যেতে পারেন অথবা আপনি তাঁর পায়ে পরে তাঁকে প্রভু ও ঈশ্বর বলে ডাকতে পারেন । " 
সিদ্ধান্ত আপনার 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ